গ্রাম আদালতঃ
ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকায় কতিপয় বিরোধ বা বিবাদ ( ফৌজদারী ও দেওয়ানী) স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে যে আদালত গঠিত হয় তাকে গ্রাম আদালত বলা হয়
উদ্দেশ্যঃ
- স্থানীয়ভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাকে অধিকতর স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করা।
- গ্রামীণ জনগণের, বিশেষ করে, নারী এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির ন্যায় বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা।
- উচ্চ আদালতে মামলার জট কমানো।
গ্রাম আদালতের সুবিধাসমূহ
- গ্রাম আদালতে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
- গ্রাম আদালতে অল্প সময়ে, স্বল্প খরচে ও অতি সহজে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়।
- আবদেনকারী ও প্রতিবাদী উভয়েই নিজেদের পছন্দমত বিচারক নিয়োগ করতে পারেন।
- সাক্ষ্য প্রমাণ হাতের কাছে থাকায় আবেদনকারী ও প্রতিবাদী সহজেই কোন কিছু গোপন করতে পারে না।
- দ্রুত নিষ্পত্তির ফলে এক বিরোধ থেকে অন্য বিরোধ সৃষ্টির সম্ভাবনা কম থাকে।
- গ্রাম আদালতে সমঝতার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় আবেদনকারী ও প্রতিবাদীর স্ব- সম্পর্ক বজায় থাকে ।
- ফৌজদারী মামলার ফি ১০/- এবং দেওয়ানী মামলার ফি ২০/- টাকার বিনিময়ে ন্যায় বিচার পাওয়া যায়।
- গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগ নিষিদ্ধ
-
- বিচারযোগ্য দেওয়ানী মামলাসমূহঃ
১। কোন চুক্তি, রশিদ বা অন্যকোন দলিল মুল্যে প্রাপ্য টাকা আদায়ের জন্য মামলা।
২। কোন অস্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার বা এর মূল্য আদায়ের জন্য মামলা।
৩। স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ার এক বছরের মধ্যে এর দখল পুনরুদ্ধারের জন্য মামলা।
৪। কোনো অস্থাবর সম্পত্তির জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতপিূরণ আদায়ের মামলা।
৫। গবাদি পশু অনধকিার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ মামলা।
৬। কৃষি শ্রমকদেরকে পরিশোধ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা।
৭। কোন স্ত্রী র্কতৃক তাহার বকেয়া ভরণপোষণ আদায়ের মামলা ।
ব্যাখ্যাঃ এই ক্রমিকে বর্ণিত বিধান অন্য যে কোন আইনে প্রদত্ত প্রতিকারের অতিরিক্ত হিসেবে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তিযোগ্য হইবে এবং বলবৎ অন্য কোন আইনে এখতিয়ার র্খব করিবে না।
যখন দাবিকৃত অর্থের পরিমান অথবা অস্থাবর সম্পত্তরি মূল্য অথবা অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির মূল্য অথবা বকেয়া ভরণপোষণের পরিমান অনধকি ৩ (তিন) লক্ষ টাকা হয়।
বিচারযোগ্য ফৌজদারী মামলাসমূহ:
- স্বেচ্ছায় আঘাত করা-৩২৩
- ক্ষতি সাধন-৪২৬
- অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ-৪৪৭
- বেআইনি সমাবেশে যোগদান-১৪৩
- দাঙ্গা-১৪৭
- বেআইনি সমাবেশ করা-১৪১
- কলহ বা মারামারি-১৬০
- প্ররোচনার ফলে ইচ্ছাপূর্বক আঘাত-৩৩৪
- অন্যায়ভাবে বাধাগ্রস্ত করা-৩৪১
- অন্যায়ভাবে আটক-৩৪২
- মারাত্মক প্ররোচনা ব্যতীত আক্রমন-৩৫২
- মারাত্বক প্ররোচনার ফলে আক্রমন-৩৫৮
- শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে অপমান-৫০৪
- অপরাধজনক ভীতি প্রদর্শন-৫০৬
- বিধাতার বিরাগভাজন হবে এরুপ বিশ্বাস জন্মাইয়া কাউকে দিয়ে কোন অপরাধ করানো-৫০৮
- কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কথা, অঙ্গভঙ্গি বা কোন কাজ করা-৫০৯
- মাতাল ব্যক্তির প্রকাশ্য অসদাচরণ-৫১০
- চুরি-৩৭৯
- বাসগৃহ ইত্যাদিতে চুরি-৩৮০
- কর্মচারী বা চাকর কর্তৃক মালিকের দখলভুক্ত সম্পত্তি চুরি-৩৮১
- অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ করা-৪০৩
- অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ-৪০৬
- প্রতারণা-৪১৭
- cপ্রতারণা ও অসাধুভাবে সম্পত্তি অর্পন করতে প্রবৃত্ত করা-৪২০
- অনিষ্ট করে পঞ্চাশ টাকা বা উহার অধিক অর্থের ক্ষতিসাধন করা-৪২৭
- দশ টাকা বা তদূর্দ্ধ মূল্যের পশু হত্যা বা বিকলাঙ্গ করে অনিষ্টসাধন-৪২৮
- যেকোনো মূল্যের গবাদি পশু ইত্যাদি অথবা পঞ্চাশ টাকা মূল্যের যেকোনো পশুকে হত্যা বা বিকলাঙ্গ করা
|